Home Loan Bangladesh হোম লোন কি, কারা দিচ্ছে ও কিভাবে?

Home Loan Bangladesh

নিজের একটি বাড়ি হবে সে স্বপ্ন অনেকেরই থাকে, অন্যদিকে দেখা যায় কারো কারো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বপ্নের মধ্যে অন্যতম স্বপ্ন নিজের একটি বাড়ি বানানো। কিন্তু নিজের বাড়ি প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়তে পারে আর্থিক সমস্যা। স্বপ্নের বাড়ি নির্মানে ব্যয়বহুল এবং প্রায় দুঃসাধ্য কাজটি আপনাদের জন্য সহজ করতে পারে একমাত্র হোমলোনই। 

Home Loan কি

বাড়ি নির্মাণ কিংবা পুরানো বাড়ি সংস্কারের জন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে উপযুক্ত ডকুমেন্ট প্রদানের মাধ্যমে য়ে ঋণ নেওয়া হয় তাই হচ্ছে হোম লোন। নীতিমালা অনুযায়ী হোম লোন বলতে ৪ ধরনের লোনকে বুঝায়। 

  1. বাড়ি/আবাসিক নির্মানের জন্য একক ঋণ
  2. জমি ক্রয় সহ বাড়ি নির্মানের জন্য সম্মিলিত ঋণ
  3. জমিসহ তৈরী বাড়ি ক্রয়ের জন্য একক ঋণ
  4. ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ঋণ

Home Loan কারা প্রদান করছে?

বাংলাদেশে গৃহ ঋণের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠানের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি)। গৃহঋণ দেওয়াটাই হচ্ছে এই সংস্থার মূল কাজ। ব্যাংক বা বিএইচবিএফসি থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ বা ফ্ল্যাট কিনতে চাইলে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ টাকা নিজের থাকতে হবে। সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে। সাধারনত সরকারি–বেসরকারি ব্যাংক সহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন- সিটি ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, আইপিডিসি, লংকা বাংলা ফিন্যান্স সহ আরো অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হোম লোন দিয়ে থাকে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক হোম লোন প্রদানের জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশে রাষ্টায়ত্ব ৪ টি ব্যাংক সরকারে সাথে চুক্তিবদ্ধ রয়েছে। ব্যাংক গুলো হল- হাউজিং বিল্ডিং ফাইন্যান্স সল্যুশন, সোনালি ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক এবং রূপালি ব্যাংক। সরকারি চাকুরিজীবিদের গৃহ নির্মানের জন্য বিশেষ ঋণ সুবিধা রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ ২০২০ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন একক বাড়ী এবং একাধিক মালিকানার বাড়ী নির্মাণের জন্য ঋণ প্রদান করে থাকে।

সাধারনত ৫ টি উদ্দ্যেশে হোম লোন দেওয়া হয়-

  • বাড়ি সংস্কারের জন্য ( ৫ লক্ষ – ৭৫ লক্ষ টাকা)
  • সেমি পাকা বাড়ি নির্মানের জন্য ( ৫ লক্ষ – ৭৫ লক্ষ টাকা)
  • পাকা বিল্ডিং বাড়ি নির্মানের জন্য ( ১৫ লক্ষ – ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা)
  • অন্য কোন ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে চাচ্ছেন আর সেটা হোম লোন ডিভিশনে  পড়লে ঋণ পাবেন (১৫ লক্ষ – ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা)
  • বাড়ি / ফ্ল্যাট কিনতে চাইলে ঋণ পাবেন (১৫ লক্ষ – ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা)

ঋণ পরিশোধের মেয়াদ 

  1. বাড়ি সংস্কারের জন্য ( ৫ লক্ষ – ৭৫ লক্ষ টাকা)= ১৫ বছরের জন্য।
  2. সেমি পাকা বাড়ি নির্মানের জন্য ( ৫ লক্ষ – ৭৫ লক্ষ টাকা)= ১৫ বছরের জন্য।
  3. পাকা বিল্ডিং বাড়ি নির্মানের জন্য ( ১৫ লক্ষ – ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা)= ২৫ বছরের জন্য।
  4. অন্য কোন ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে চাচ্ছেন আর সেটা হোম লোন ডিভিশনে 
  5. পড়লে ঋণ পাবেন (১৫ লক্ষ – ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা)  = ২৫ বছরের জন্য। 
  6. বাড়ি / ফ্ল্যাট কিনতে চাইলে ঋণ পাবেন (১৫ লক্ষ – ১ কোটি ২ লক্ষ টাকা) = ২৫ বছরের জন্য।

Home Loan কারা নিচ্ছে

সাধারন প্রবাসীরা, সরকারি / বেসরকারি চাকুরিজীবীরা, সাধারন ব্যবসায়ী, ডাক্তার, ইজ্ঞিনিয়ার, বাসাওয়ালা, নিজে স্বনির্ভরশীল ব্যক্তি হোম লোন নিতে পারবেন। যিনি ঋণ নিবেন তার মাসিক আয় সর্বনিন্ম 20 হাজার /25 হাজার/ 50 হাজার হতে হবে যা ক্ষেত্রভেদে  পরিবর্তনযোগ্য। 

Home Loan এর ক্ষেত্রে যোগ্যতা প্রয়োজন

Home-loan এর ক্ষেত্রে যে সকল যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন তা নিম্নে বর্ণিত হল -

  • যে ব্যাংক থেকে গৃহ নির্মানের জন্য ঋণ নিবেন উক্ত ব্যাংকের গৃহ নির্মাণ ঋণ ফরম  যথাযথভাবে পূরন করতে হবে।
  • বয়সসীমা ১৮ থেকে ৬৫ বছর হতে হবে। ঋণ আবেদনকারীর বয়স ৬৫ বছরের উপরে হলে প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে / মেয়েকে নিয়ে যৌথ আবেদন করতে হবে।
  • ঋণ আবেদনকরীকে জন্মসূত্রে বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে। 
  • প্রবাসীদের ক্ষেত্রে বৈধভাবে দেশের বাইরে রয়েছে ৩ বছর আয় করার জন্য তা  প্রয়োজন কাগজ ও ডকুমেন্ট জমা দেয়ার মাধ্যমে দাখিল করতে হবে।
  • বাড়ি নির্মানের জন্য ঋণ গ্রহীতার খাশ দখলী / নিজ ক্রয়কৃত জমি হতে হবে।
  •  আম-মোক্তার ঋণ আবেদনকারী প্রবাসীর পক্ষে ঋণ গ্রহন করতে পারবেন। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পাওয়ার অব এটনী -২০১২ অনুসরন করে ব্যাংকের  নমুনা মোতাবেক আমমোক্তার নামা দাখিল করতে হবে।
  • নিরক্ষর ব্যক্তিকে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে উপযুক্ত জামিনদার (স্বামী/স্ত্রী, পিতামাতা, পুত্র-কন্যা) নিয়োগ করতে হবে।
  • সিডিএ প্লান পাশ সনদ থাকতে হবে।
  • সর্বশেষ ১ বছরের ব্যাংক বিবরনী।
  • সর্বশেষ ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • জেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস কর্তৃক ইস্যুকৃত ১২ বছরের নির্দয় সনদ (এন,ই.সি.)ব্যাংকে প্রদান করিতে হবে।
  • সরকারি প্লটের ক্ষেত্রে মূল বরাদ্দ পত্র, দখল হস্তান্তরপত্র, মূল লীজ দলিল এবং বন্ধক প্রদানের অনুমতিপত্র ব্যাংকে পদান করিতে হবে।
  • সাধারন প্রবাসীদের জন্য আয়ের উপযুক্ত প্রমান।
  • সরকারি/বেসরকারি চাকুরিজীবীদরে জন্য ২ বছর চাকরীর অভিজ্ঞতা।
  • সাধারন ব্যবসায়ী 3 বছর ব্যবসার অভিজ্ঞতা ও আপডেট ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।

চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে ১ বছরের প্র্যাকটিস এক্সপেরিয়েন্স/ প্রকৌশলীদের ক্ষেত্রে ২ বছর প্রফেশনাল এক্সপেরিয়েন্স/ বাসাওয়ালা অথবা নিজে স্বনির্ভরশীলদের জন্য আয়ের যথাযথ প্রমান।

ব্যাংকে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য

  • হোম ক্রেডিটের কিংবা টেকওভার লোনের নিবন্ধনকৃত মালিকানা দলিল থাকতে হবে (যদি লাগে)
  • হোম ক্রেডিট লোনের প্রাইস কোটেশন।
  • সংশ্লিষ্ট নথি থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পূরন করে দাবি করতে হবে।
  • অনুমদিত নকশা ও অনুমোদনের সত্যায়িত ফটোকপি।
  • সাইট পরিদর্শনের জন্য রুট ম্যাপ দিতে হবে।
  • মূল দলিল, নামজারি খতিয়ান, ডিসিআর, হালসনের খাজনা রশিদের সথ্যায়িত ফটোকপি ইত্যাদি।
  • জমির মূল মালিকানা দলিল (মূল দলিলের ১ কপি সত্যায়িত ফটোকপি সহ), বায়া দলিল ব্যাংকে পদান করিতে হবে।
  • সি. এস, এস.এ, আর-এস ও বি. এস খতিয়ানের জাবেদা নকল ব্যাংকে প্রদান করিতে হবে।
  • ডিসি, আর, খাজনা রশিদ ও নামলায় খতিয়ান ব্যাংকে প্রদান করতে হবে।

হোম লোনের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া

প্রথমেই বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন এর ওয়েব সাইটে যেতে হবে- https://bhbfc.org/genloan/
ঋণের আবেদন ফরম -অপশনে ক্লিক করতে হবে।
তাহলে নিম্নের ছবির মতো ফরম আসবে। সেটা ফিলাপ করে ফেলতে হবে।
Home Loan Bangladesh

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad